Time & Date

দরকার বাবর আর রিজওয়ানের মতো ওপেনিং জুটি

থায় বলে, প্রয়োজন আবিষ্কারের জননী। এই প্রয়োজন মেটাতেই পাকিস্তান টিম ম্যানেজমেন্ট বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ানকে দিয়ে ইনিংস শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। দুজনার কেউই প্রথাগত ওপেনার নন। কিন্তু তারা ওপেন করছেন, বেশ সফলও।



মাঝে কিছুদিন টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে হালে পানি পাচ্ছিল না পাকিস্তান। হঠাৎ করেই তাদের ম্যানেজমেন্ট মিডল অর্ডার থেকে বাবর আজম আর লেট মিডল অর্ডার থেকে রিজওয়ানকে উঠিয়ে এনে মেকশিফট ওপেনিং জুটি তৈরি করে। এখনকার পাকিস্তান দলে সবচেয়ে বড় নির্ভরতা হলো, তাদের দুই ওপেনার বাবর আজম আর মোহাম্মদ রিজওয়ান।


তারা শুধুই ওপেনারই নন। দলের ব্যাটিং মেরুদণ্ডও। পাকিস্তানের পুরো ব্যাটিংটাই আসলে ররজওয়ান আর বাবর আজমের ওপর দাঁড়িয়ে। তারা জানেন, আমাদের পরে যারা আছেন, তারা আমাদের মানের না। তাই আমাদের দুজনকেই মূল দায়িত্ব পালন করতে হবে। রান করতে হবে। ইনিংসটাকে একটা শক্ত ভিতের ওপর দাঁড় করাতে হবে। পারলে একজনকে শেষ বল পর্যন্ত খেলতে হবে। এই বোধ মাথায় নিয়েই খেলেন দু'জন।


সময় এসেছে টিম বাংলাদেশেরও অমন চিন্তা করার। ওপেনিং সংকট কাটাতে বাংলাদেশ ম্যানেজমেন্টও অবশ্য মেকশিফট ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ আর সাব্বির রহমানকে দিয়ে ইনিংস শুরুর চেষ্টা করে যাচ্ছে। তবে সেটা ব্যর্থ চেষ্টাই মনে হচ্ছে। তাই সময় হয়েছে সঠিক পথে হাঁটার।


মিরাজ আর সাব্বিরকে দিয়ে ওপেন করানোর চিন্তা বাদ দিয়ে ব্যাটিং টেকনিক, স্কিল আর টেম্পারমেন্ট ভালো এবং যারা লম্বা ইনিংস খেলতে পারেন এমন দুজনকে দিয়ে ‘ট্রাই’ করাই বোধকরি যুক্তিযুক্ত হবে। ওই দুই ওপেনারের অন্তত একজনের কাজই হবে ইনিংস শেষ করে সাজঘরে ফেরা।


টেকনিক আর শট খেলার পারদর্শিতার বিচারে লিটন দাস সন্দেহাতীতভাবে সেরা পছন্দ। কিন্তু তার ধৈর্য কম। লম্বা ইনিংস খেলার ইচ্ছেতে ঘাটতি পরিষ্কার। অনেক বেশি ছটফট করেন। একই ওভারে চার-ছক্কা হাঁকানোর পরও দেখা যায়, তিনি ‘ইম্প্রোভাইজ’ বা বানিয়ে মারতে গিয়ে কিংবা অনসাইডে তুলে মারতে গিয়ে উইকেট বিসর্জন দিয়ে আসছেন।


আজও মধ্য তিরিশে গিয়ে সেভাবেই আউট হয়েছেন লিটন। তার সঙ্গে মিডল অর্ডার থেকে আর একজনকে নেওয়া যেতে পারে যিনি রিজওয়ানের মত উইকেট আগলে পড়ে থাকার পাশাপাশি শেষ বল পর্যন্ত ক্রিজে থেকে রান চাকা সচল রাখতে পারবেন। আজকের ম্যাচে রিজওয়ানের ব্যাটিংটাই হতে পারে বাংলাদেশের টপ অর্ডারের জন্য আদর্শ।


শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলে ওভালে অধিনায়ক বাবর আজম আর উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ান প্রথম উইকেটে ৫২ রানের জুটি গড়ে দেন। বাবর (২৫ বলে ২২) আউট হয়ে গেলেও রিজওয়ান উইকেট ধরে রাখেন। একদিক আগলে রেখে ছিলেন শেষ বল পর্যন্ত। মূলত রিজওয়ানের হাত ধরেই শেষ পর্যন্ত ১৬৭ রানের লড়াকু স্কোর দাঁড় করায় পাকিস্তান।


সেখানে বাংলাদেশের দুই মেকশিফট ওপেনার মিরাজ (১১ বলে ১০) আর সাব্বির (১৮ বলে ১৪) বহুদূরে, লিটন দাস আর আফিফ হোসেন ধ্রুব‘র মধ্যেও কেউ রিজওয়ান হতে চাননি। চাননি ম্যাচটা শেষ করে আসতে।


প্রথম চার ব্যাটারের অন্তত একজন যদি রিজওয়ানের মত ইনিংস শেষ করে আসতে পারতেন, তাহলে সত্যি খেলার ফল ভিন্ন হতে পারতো। কিন্তু তারা কেউই সেই চেষ্টা করলেন না। খেলতে গেলেন নিজের মত।


অথচ তাদের সামনে সুযোগ ছিল রিজওয়ানের মত (৫০ বলে ৭৮ রান) দারুণ একটি ইনিংস খেলে শেষ পর্যন্ত ক্রিজে থাকার। তাতে করে বাকিদের হাত খুলে খেলা সহজ হয়ে যেতো। তারাও সাহস নিয়ে মারতে পারতেন।


যেভাবে ইয়াসির আলী রাব্বি শেষ ওভারে হাত খুলে মেরেছেন ঠিক সেই রকম ফ্রি খেলার সুযোগ থাকতো পরের ব্যাটারদের। কিন্তু লিটন ২৬ বলে ৩৫ আর আফিফ ২৩ বলে ২৫ করার পর ভাবলেন অনেক হয়ে গেছে। একজনও উইকেটে পড়ে থাকার চেষ্টা করলেন না।


শুধু এই আসরেই নয়। বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি ব্যাটিং বরাবরই খারাপ। এখন সময় হয়েছে ভালোর পথ খুঁজে বের করার। এই মেকশিফট ওপেনার দিয়ে শুরু না করে এমন দুজন ওপেনার খুঁজে বের করতে হবে, যাদের বাবর আর রিজওয়ানের মতো লম্বা ইনিংস খেলার সামর্থ্য আছে।


চটকদার মার মেরে সবাই যদি ছোটখাটো ইনিংস খেলেই সাজঘরে ফেরেন, তবে ম্যাচ বের করা কঠিনই থেকে যাবে। অন্ততপক্ষে একজনকে ধৈর্য, সংযম, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, রান চাকা সচল রেখে থাকতে হবে ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত। টপঅর্ডারে এমন মানসিকতার ব্যাটার বাংলাদেশের খুব দরকার।


এআরবি/এমএমআর/এএসএম


তথ্যসূত্রঃ  Jagonews24.com

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.